The wow singnal

দ্য ওয়াও সিগন্যাল!
এই পৃথিবীতেই আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নানা রহস্য। সেগুলোর কথা শুনলে কখনও তাজ্জব হতে হয়, আবার কখনও অবাক বিস্ময়ে শিউরে উঠতে হয়। আজ আপনাদের জানাবো ঠিক তেমনই একটি ঘটনা সম্পর্কে।
১৫ আগস্ট, ১৯৭৭ সাল। দিনটি আর পাঁচটা স্বাভাবিক দিনের মতো কাটলেও জেরি ঘুনাক্ষরেও কী আন্দাজ করতে পেরেছিলেন সেদিন রাতে কী হতে যাচ্ছে?
জেরি এহম্যান!
যুক্তরাষ্টের ওহাইও ইউনিভার্সিটির একটি প্রোজেক্ট SETI (Search for Extraterrestrial Intelligence) এর সেচ্ছাসেবক তিনি। এই প্রোজেক্টটির কাজ হচ্ছে মহাজাগতিক বুদ্ধিমান প্রাণীর অস্তিত্ব অনুসন্ধান করতে অতি দূরবর্তী মহাকাশে রেডিও সিগন্যাল পাঠানো; এই আশায় যে যদি ভিনগ্রহে কোনো বুদ্ধিমান প্রাণী থেকে থাকে, তাহলে তারাও পাল্টা রেডিও সংকেত পাঠাবে।
জেরির দায়িত্ব ছিল প্রতি রাতে এই সংকেতের জন্য অপেক্ষা করা।
দিনের পর দিন কেটে গেলেও রিসিভারে টুঁ শব্দটিও হয়নি। সেইদিন রাতেও সবকিছু চলছিল অন্য দিনগুলোর মতই। হঠাৎ রাতের নিরবতাকে খান খান করে ভেঙে দিয়ে প্রচন্ড তীক্ষ্ণ শব্দে খড়খড় করে উঠলো রেডিও। জেরি তার তন্দ্রালাগা চোখ ডলে তাকালেন রেডিওটির দিকে। দু’চোখে অবিশ্বাস! রেডিওটি কাঁপছে! বেতার তরঙ্গ রিসিভ করতে শুরু করেছে রিসিভার। অত্যন্ত তীক্ষ্ণ সংকেত আসছে, একটানা।
হতভম্ব হয়ে রিসিভারের দিকে তাকিয়ে রইলেন তিনি, যদিও দিনের পর দিন এই সময়টির জন্যেই তিনি অপেক্ষা করেছেন, তারপরেও তার বিশ্বাস হচ্ছিল না যে সত্যি সত্যিই সংকেত আসছে, দূর মহাকাশ থেকে। একটানা ৭২ সেকেন্ড সংকেত আসলো। তারপর থেমে গেল। জেরির হতভম্ব ভাব তখনও কাটেনি। তার হুঁশ ফিরলো রিসিভারের সাথে যুক্ত কম্পিউটারের প্রিন্টারের শব্দে। প্রিন্টারটি স্বয়ংকৃয়ভাবে সংকেতের প্রিন্ট করে ফেলেছিল। সংকেতের প্রিন্ট হাতে নিয়েও তার বিশ্বাস হচ্ছিল না যে তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি সম্ভবত অন্য কোনো নক্ষত্রপুঞ্জ থেকে পাঠানো কোনো সংকেত রিসিভ করেছেন।
প্রিন্টআউটে চোখ গেল তার। দূর্বোধ্য কোডগুলোর কিছুই বুঝতে পারছেন না তিনি। হতভম্ব অবস্থায়ই প্রিন্টআউটের এক কোনায় লিখলেন “ওয়াও”! এরপর থেকেই এটি পরিচিতি পেল “দ্য ওয়াও সিগন্যাল” নামে।
খবরটি দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ল চারপাশে। বিজ্ঞানীরা ভিড় জমালেন। জানা গেল ঐ বেতার যন্ত্রের ক্ষমতা অনুযায়ী সর্বোচ্চ দূরবর্তী সীমা থেকে সংকেতটি এসেছে। সংকেতটি এসেছে স্যাগিট্যারিয়াস নক্ষত্রপুঞ্জ থেকে, যা পৃথিবী থেকে ১২০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত।
তবে কী অর্থ ছিল ঐ সংকেতের, তা আজও জানা যায়নি।

No comments

Powered by Blogger.